Saturday, July 11, 2015

ফিতরা নিজে বিতরণ করা



ফিতরা নিজে বিতরণ করা :
---------------------------
আসল হচ্ছে প্রত্যেক ব্যক্তি তার ফিতরা সে নিজে হকদারকে পৌঁছে দিবে। [ সউদী ফাতাওয়া কমিটি ৯/৩৮৯]
কারণ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদেশ

‘‘ এবং তিনি তা লোকদের নামাযে বের হওয়ার পূর্বে আদায় করে দেয়ার আদেশ করেন’’। কথাটি প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য স্বতন্ত্র আদেশ। এরকম নয় যে, সবাই একত্রে জমা করে তা বিতরণ কর। এই কারণে সাহাবী ইবনে উমার তাঁর ফিতরা হকদারদের এক দুই দিন পূর্বে বিতরণ করে দিতেন। [ বুখারী নং ১৫১১]
* নিয়ম হবে প্রত্যেক ব্যক্তি তার গ্রাম বা শহররে আশে পাশে যাকে ফিতরা পাবার হকদার মনে করবে তাকে ফিতরা দিয়ে আসবে। বর্তমানে সউদী আরবে অধিকাংশ লোকেই এই পদ্ধতিতে ফিতরা আদায় করে থাকে।
* তবে নির্ভরযোগ্য কোন সংস্থা , সর্দার বা ইমামকেও নিজ ফিতরা বণ্টনের প্রতিনিধি করা জায়েজ। [ সউদী ফাতাওয়া কমিটি ৯/৩৮৯] এ ক্ষেত্রে সঠিক নিয়মে ও সঠিক সময়ে বণ্টনের দায়িত্ব তাদের উপর বর্তাবে।
=ফিতরা একত্রে জমা করে কিছু দিন পর বিক্রয় করে মূল্য বিতরণ করা:
আমাদের মনে রাখা দরকার যে, খাদ্য দ্রব্য দ্বারাই ফিতরা দেওয়া সুন্নত; মূল্য দ্বারা নয়। যেমনটি উপরে বর্ণিত হয়েছে। খাদ্য দ্রব্য বিক্রি করে মূল্য বিতরণ করলে পরোক্ষভাবে মূল্য দ্বারাই ফিতরা দেওয়া হল যা, সুন্নতের বরখেলাফ। আর ঈদের নামাযের পূর্বে ফিতরা আদায় করার যে হাদীসগুলি বর্ণিত হয়েছে তার অর্থ এটা নয় যে, নামাযের পূর্বে ফিতরা জমা কর এবং পরে তা বিতরণ কর। এ বিষয়ে বর্ণিত হাদীসটি যয়ীফ, তবুও আবার পরে বলতে যদি ঈদের কয়েক দিন পরে বিতরণ করা হয়। ঈদের আগে ফকীর- মিসকিনদের হাতে খাবার পৌঁছালে না তারা আনন্দিত হবে বা খুশি করার সুযোগ পাবে। নচেৎ তাদের যেই সমস্যা অন্য দিনে থাকে তা ঈদের দিনেও থাকবে।
এ বিষয়ে সউদী স্থায়ী উলামা পরিষদের ফতোয়া : জেদ্দার জামইয়াতুল বির (জন কল্যাণ সংস্থা) নামক সংস্থা সউদী ফাতাওয়া বোর্ডের নিকট প্রশ্ন করে যে, তারা অনেক এতীম, অভাবী ছাত্র, দুস্থ পরিবার ও বিকলাঙ্গদের আর্থিক সহযোগিতা সহ খাবার দ্রব্যাদি সরবরাহ করে থাকে। তারা কি লোকদের ফিতরা নিয়ে পরে ধীরে ধীরে বিতরণ করতে পারবে ? কিংবা টাকা-পয়সা নিয়ে তা দ্বারা পরে খাদ্য দ্রব্য কিনে তাদের মাঝে বিতরণ করতে পারবে ?
উত্তরে ফাতায়া বোর্ড বলেন : সংস্থার উপর জরুরী যে, তারা যেন ফিতরার হকদারদের মাঝে তা ঈদের নামাযের পূর্বেই বণ্টন করে দেয়। এর বেশী দেরী করা জায়েজ নয় ; কারণ নবী (সা:) ফকীরদের মাঝে তা ঈদের নামাযের পূর্বে পৌঁছে দিতে আদেশ করেছেন। সংস্থা ফিতরা দাতার পক্ষ হতে এক জন প্রতিনিধি স্বরূপ। সংস্থা সেই পরিমাণেই ফিতরা গ্রহণ করবে , যেই পরিমাণ সে ঈদের নামাযের পূর্বে বণ্টন করতে সক্ষম। আর ফিতরায় মূল্য দেওয়া জায়েজ নয়। কারণ শরীয়তী দলীলসমূহ খাদ্য বস্তু দ্বারা ফিতরা বের করাকে জরুরী করেছে। তাই শরীয়তী দলীলের পরিবর্তে কোন মানুষের কথার দিকে ভ্রুক্ষেপ করা যাবে না। আর ফিতরা দাতারা যদি সংস্থাকে অর্থ দেয় এই উদ্দেশ্যে যে সংস্থা সেই অর্থ দ্বারা খাদ্য দ্রব্য ক্রয় করে তা ফকীরদের মাঝে বিতরণ করবে, তাহলে সংস্থাকে ঈদের নামাযের পূর্বেই তা বাস্তবায়ন করতে হবে। সংস্থার জন্য বৈধ নয় যে, সে মূল্য বের করবে। [ ফতুয়া নম্বর ১৩২৩১, খণ্ড ৯/৩৭৭]

No comments:

Post a Comment