ফিতরার হকদার কারা ?
--------------------------------------
ফিতরা পাবার যোগ্য কারা বা ফিতরার হকদার কোন্ কোন্ প্রকারের লোকেরা ? এ বিষয়ে ইসলামী বিদ্বানগণের মতভেদ রয়েছে।
একদল বিদ্বান মনে করেন যারা সাধারণ সম্পদের যাকাতের হকদার তারাই ফিতরের যাকাতের (ফিতরার) হকদার। আর তারা হল আট প্রকারের লোক:
১- ফকীর
২- মিসকিন
৩- সাদাকা আদায়ের জন্য নিযুক্ত কর্মচারী
৪- যাদের অন্তর ইসলামের পথে আকর্ষণ করা প্রয়োজন
৫-দাস-মুক্তির জন্যে
৬- ঋণগ্রস্তদের ঋণ পরিশোধের উদ্দেশ্যে
৭- আল্লাহর রাস্তায়
৮- মুসাফিরদের সাহায্যার্থে ( সূরা তওবা /৬০]
এই মত পোষণকারীদের দলীল হল : ফিতরের সাদাকাকে অর্থাৎ ফিতরাকে নবীজী যাকাত ও
সাদাকা বলেছেন তাই যেটা মালের যাকাতের খাদ হবে, সেটাই ফিতরারও হবে।
সাদাকার যেই খাদ আল্লাহ সূরা তওবায় উল্লেখ করেছেন সেই খাদ সাদাকাতুল
ফিতরের জন্যও হবে।
অন্য এক দল বিদ্বান মনে করেন : সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা কেবল ফকীর মিসকিনদের হক, অন্যদের নয়।
এই মত পোষণকারীদের দলীল হল : ইবনে আব্বাস (রাযি:) এর হাদীস, তিনি বলেন :
আল্লাহর রাসূল ফিতরের যাকাত (ফিতরা) ফরয করেছেন রোজাদারের অশ্লীলতা ও বাজে কথা-বার্তা হতে পবিত্রতা এবং মিসকিনদের আহার স্বরূপ .. ’’ [আবু দাউদ, যাকাতুল ফিতর নং ১৬০৬/ হাদীস হাসান, ইরওয়াউল গালীল নং ৮৪৩]
এই মতকে সমর্থন জানিয়েছেন ইবনে তাইমিয়্যাহ, ইবনুল ক্বাইয়্যূম, শাওকানী, আযীমাবাদী, ইবনু উসাইমীন সহ আরও অনেকে। [ দেখুন: মাজমুউ ফাতাওয়া ২৫/৭৩,যাদুল মাআদ ২/২২, নায়লুল আউত্বার ৩-৪/৬৫৭, আওনুল মা’বূদ ৫-৬/৩, শারহুল মুমতি ৬/১৮৪]
এই মতটিই অধিক সহীহ কারণ :
(ক) এই মতের পক্ষে দলীল বিদ্যমান আর প্রথম মতটি একটি কিয়াস (অনুমান) মাত্র। আর দলীল-প্রমাণের বিদ্যমানতায় কিয়াস বৈধ নয়।
(খ) ফিতরাকে যাকাত বলা হলেও উভয়ের মধ্যে আছে অনেক পার্থক্য। ফিতরা এমন ব্যক্তির উপরও জরুরী যার বাড়িতে সামান্য কিছু খাবার আছে মাত্র। কিন্তু যাকাত কেবল তার উপর জরুরী যে বিশেষ এক ভাল অংকের অর্থের মালিক। যাকাত ধন-সম্পদের কারণে জরুরী হয় কিন্তু ফিতরা ইফতারের কারণে দিতে হয়। এসব কারণে ফিতরা ও যাকাতকে এক মনে করা অসমীচীন।
বাকি থাকলো ফিতরাকে এই কারণে সাদাকা বলা হয়েছে যে, সাদাকা একটি দানের ব্যাপক শব্দ। যাকাত, ফিতরা এবং সাধারণ দানকেও সাদাকা বলা হয়। সাদাকা বললেই যে যাকাতকে বুঝায় তা নয়। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘‘ কুল্লু মা’রুফিন সাদাকা’’ অর্থাৎ প্রত্যেক ভাল কাজ সদকা। তবে নি:সন্দেহে প্রত্যেক ভাল কাজ যাকাত নয়। তবুও নবীজী সাদাকা বলেছেন। তাই ফিতরাকে সাদাকা বলার কারণে তা যাকাতের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, যাকাতুল ফিতরের খাদসমূহের মধ্যে মাদরাসা ও মসজিদ নেই। কিন্তু মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক এবং মসজিদের ইমাম যদি ফকীর মিসকিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে তারা ফিতরার হকদার হিসেবে গণ্য হবেন বরং অন্যান্য ফকীর মসিকীনদের থেকে তারা বেশী হকদার হবেন। কারণ এঁরা দ্বীনের শিক্ষা অর্জনে ও অন্যকে শিক্ষা দানে নিয়োজিত, যেই গুণটি অন্য ফকীর মিসকিনদের নেই।
[ আর যা সঠিক তা আল্লাহই ভাল জানেন]
-শাইখ আব্দুর রাকিব মাদানী
অন্য এক দল বিদ্বান মনে করেন : সাদাকাতুল ফিতর বা ফিতরা কেবল ফকীর মিসকিনদের হক, অন্যদের নয়।
এই মত পোষণকারীদের দলীল হল : ইবনে আব্বাস (রাযি:) এর হাদীস, তিনি বলেন :
আল্লাহর রাসূল ফিতরের যাকাত (ফিতরা) ফরয করেছেন রোজাদারের অশ্লীলতা ও বাজে কথা-বার্তা হতে পবিত্রতা এবং মিসকিনদের আহার স্বরূপ .. ’’ [আবু দাউদ, যাকাতুল ফিতর নং ১৬০৬/ হাদীস হাসান, ইরওয়াউল গালীল নং ৮৪৩]
এই মতকে সমর্থন জানিয়েছেন ইবনে তাইমিয়্যাহ, ইবনুল ক্বাইয়্যূম, শাওকানী, আযীমাবাদী, ইবনু উসাইমীন সহ আরও অনেকে। [ দেখুন: মাজমুউ ফাতাওয়া ২৫/৭৩,যাদুল মাআদ ২/২২, নায়লুল আউত্বার ৩-৪/৬৫৭, আওনুল মা’বূদ ৫-৬/৩, শারহুল মুমতি ৬/১৮৪]
এই মতটিই অধিক সহীহ কারণ :
(ক) এই মতের পক্ষে দলীল বিদ্যমান আর প্রথম মতটি একটি কিয়াস (অনুমান) মাত্র। আর দলীল-প্রমাণের বিদ্যমানতায় কিয়াস বৈধ নয়।
(খ) ফিতরাকে যাকাত বলা হলেও উভয়ের মধ্যে আছে অনেক পার্থক্য। ফিতরা এমন ব্যক্তির উপরও জরুরী যার বাড়িতে সামান্য কিছু খাবার আছে মাত্র। কিন্তু যাকাত কেবল তার উপর জরুরী যে বিশেষ এক ভাল অংকের অর্থের মালিক। যাকাত ধন-সম্পদের কারণে জরুরী হয় কিন্তু ফিতরা ইফতারের কারণে দিতে হয়। এসব কারণে ফিতরা ও যাকাতকে এক মনে করা অসমীচীন।
বাকি থাকলো ফিতরাকে এই কারণে সাদাকা বলা হয়েছে যে, সাদাকা একটি দানের ব্যাপক শব্দ। যাকাত, ফিতরা এবং সাধারণ দানকেও সাদাকা বলা হয়। সাদাকা বললেই যে যাকাতকে বুঝায় তা নয়। যেমন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন : ‘‘ কুল্লু মা’রুফিন সাদাকা’’ অর্থাৎ প্রত্যেক ভাল কাজ সদকা। তবে নি:সন্দেহে প্রত্যেক ভাল কাজ যাকাত নয়। তবুও নবীজী সাদাকা বলেছেন। তাই ফিতরাকে সাদাকা বলার কারণে তা যাকাতের অন্তর্ভুক্ত হবে না।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, যাকাতুল ফিতরের খাদসমূহের মধ্যে মাদরাসা ও মসজিদ নেই। কিন্তু মাদ্রাসার ছাত্র, শিক্ষক এবং মসজিদের ইমাম যদি ফকীর মিসকিনদের অন্তর্ভুক্ত হয়, তাহলে তারা ফিতরার হকদার হিসেবে গণ্য হবেন বরং অন্যান্য ফকীর মসিকীনদের থেকে তারা বেশী হকদার হবেন। কারণ এঁরা দ্বীনের শিক্ষা অর্জনে ও অন্যকে শিক্ষা দানে নিয়োজিত, যেই গুণটি অন্য ফকীর মিসকিনদের নেই।
[ আর যা সঠিক তা আল্লাহই ভাল জানেন]
-শাইখ আব্দুর রাকিব মাদানী
No comments:
Post a Comment