Wednesday, June 10, 2015

ইবাদত-বন্দেগী ক্ববুল হওয়ার জন্য অন্যতম ২টি শর্ত



আসসালামুলাইকুম
আল্লাহ তা‘আলার নিকট মানুষের সকল প্রকার ইবাদত-বন্দেগী ক্ববুল হওয়ার জন্য অন্যতম ২টি শর্ত।
১. ইবাদত খালেছ ভাবে আল্লাহর জন্যে হ’তে হবে অর্থাৎ রিয়া বা লৌকিকতা মুক্ত হ’তে হবে।
২. ইবাদত কুর‘আন ও সুন্নাহ মুতাবিক অর্থাৎ পবিত্র কুর‘আন ও ছহীহ হাদীছের আলোকে হ’তে হবে। যে ব্যক্তি লোক দেখানোর জন্য অর্থাৎ মানুষকে খুশি করার উদ্দেশ্যে ইবাদত করবে, সে ছোট শিরক করার অপরাধে অপরাধী হবে, আর তার সৎ আমল সবই নষ্ট হয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿إِنَّ الْمُنَافِقِيْنَ يُخَادِعُوْنَ اللهَ وَهُوَ خَادِعُهُمْ وَإِذَا قَامُوْا إِلَى الصَّلاَةِ قَامُوْا كُسَالٰى يُرَآؤُوْنَ النَّاسَ وَلاَ يَذْكُرُوْنَ اللهَ إِلاَّ قَلِيْلاً﴾
(النساء:১৪২)
অর্থঃ “নিশ্চয়ই মুনাফিকরা আল্লাহর সাথে প্রতারণা করে, অথচ আল্লাহ তা‘আলাও তাদের সাথে প্রতারণা করেন। যখন তারা নামাযে দাঁড়ায় তখন তারা অলসতার সাথে দাঁড়ায়। তারা মানুষদেরকে দেখায় যে তারা নামায আদায় করছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তারা মহান আল্লাহকে খুব কমই স্মরণ করে” (আন-নিসা : ১৪২)। নিজের সুনাম, সুখ্যাতি ও কাজের কথা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়–ক, আর লোকেরা দেখে ও শুনে বাহবা দিক এ ধরনের নিয়্যেত নিয়ে যে কাজ করবে, সে অবশ্যই শির্কে পতিত হবে এতে কোন সন্দেহ নেই। এরূপ আকা ঙক্ষাকারী ব্যক্তিদের সম্পর্কে ইসলামী শরী‘য়াতে কঠোর হুঁশিয়ারী বাণী উচ্চারিত হয়েছে। যেমন ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীছে এসেছে, রাসূলুল্লা-হ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি অ-সাল্লাম) বলেছেন, "مَنْ سَمَّعَ سَمَّعَ اللهُ بِهِ وَ مَنْ رَاءَىَ رَاءَىَ اللهُ بِهِ"
অর্থঃ “যে ব্যক্তি মানুষকে শুনানোর জন্য কোন কাজ করে, আল্লাহ তা‘আলা এর বদলে মানুষকে শুনিয়ে দিবেন। আর যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে কোন কাজ করবে আল্লাহ তা‘আলা এর বদলে মানুষদেরকে দেখিয়ে দিবেন” অর্থাৎ আল্লাহ তা‘আলা এ সব লোকদেরকে কঠিন শাস্তি দিবেন (মুসলিম)। যে ব্যক্তি একই সাথে আল্লাহ ও মানুষদেরকে সন্তুষ্ট করার উদ্দেশ্যে ইবাদত করবে, তার সমস্ত আমল নষ্ট হয়ে যাবে। এ সম্পর্কে হাদীছে কুদসীতে এসেছে, মহান আল্লাহ বলেছেন,
" أَنَا أَغْنَى الشُّرَكَاءِ عَنِ الشِّرْكِ, مَنْ عَمِلَ عَمَلاً أَشْرَكَ فِيْهِ مَعِىْ غَيْرِىْ تَرَكْتُهُ وَ شِرْكَهُ"
(مسلم ح/২৯২৫)
অর্থঃ “আমি আল্লাহ সকল অংশীস্থাপনকারীদের শির্ক তথা অংশীস্থাপন থেকে সবচেয়ে বেশী অমুখাপেক্ষী। যে কেউ এমন আমল করল যে, তাতে আমার সাথে অন্য কাউকে অংশী স্থাপন করল এমতাবস্থায় আমি তাকে এবং তার আমল উভয়কে বর্জন করে থাকি” (ছহীহ মুসলিম হাদীছ নং ২৯৮৫)।
তবে কেউ কোন আমল শুরু করার পর যদি তার মধ্যে লোক দেখানো ভাব জাগ্রত হয়, আর সে তা ঘৃণা করে এবং তা থেকে সে সরে আসতে চেষ্টা করে তাহ’লে তার ঐ আমল শুদ্ধ হবে। কিন্তু যদি সে তা না করে, বরং লোক দেখানো ভাব মনে উদয় হওয়ার জন্য শান্তি ও আনন্দ অনুভব করে, তাহ’লে অধিকাংশ আলিমদের মতে তার ঐ আমল সব বাতিল হয়ে যাবে।

No comments:

Post a Comment