Thursday, June 25, 2015

(বুখারী হা/১০০; মুসলিম হা/২৬৭৩; মিশকাত হা/২০৬ ‘ইলম’ অধ্যায়) ।

ﻭَﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺑْﻦِ ﻋَﻤْﺮٍﻭ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠﻪِ
ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻻَ ﻳَﻘْﺒِﺾُ ﺍﻟْﻌِﻠْﻢَ
ﺍﻧْﺘِﺰَﺍﻋًﺎ ﻳَﻨْﺘَﺰِﻋُﻪُ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻌِﺒَﺎﺩِ ﻭَﻟَﻜِﻦْ ﻳَﻘْﺒِﺾُ ﺍﻟْﻌِﻠْﻢَ
ﺑِﻘَﺒْﺾِ ﺍﻟْﻌُﻠَﻤَﺎﺀِ ﺣَﺘَّﻰ ﺇِﺫَﺍ ﻟَﻢْ ﻳُﺒْﻖِ ﻋَﺎﻟِﻤًﺎ ﺍﺗَّﺨَﺬَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱُ
ﺭُﺀُﻭﺳًﺎ ﺟُﻬَّﺎﻻً ﻓَﺴُﺌِﻠُﻮﺍ ﻓَﺄَﻓْﺘَﻮْﺍ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻋِﻠْﻢٍ ﻓَﻀَﻠُّﻮﺍ
ﻭَﺃَﺿَﻠُّﻮﺍ -
অনুবাদ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর
(রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)
এরশাদ করেছেন যে, আল্লাহ তার
বান্দাদের অন্তর হতে ইলম টেনে
বের করে নেবেন না। বরং
আলেমদের উঠিয়ে নেবার
মাধ্যমেই ইলম উঠিয়ে নেবেন।
অবশেষে যখন তিনি কোন
আলেমকে অবশিষ্ট রাখবেন না,
তখন লোকেরা মুর্খদের নেতারূপে
গ্রহণ করবে। অতঃপর কোন কিছু
জিজ্ঞেস করা হ’লে বিনা ইলমেই
তারা ফৎওয়া (সিদ্ধান্ত) দিবে।
ফলে তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হবে
এবং অন্যকে পথভ্রষ্ট করবে’ (বুখারী
হা/১০০; মুসলিম হা/২৬৭৩; মিশকাত
হা/২০৬ ‘ইলম’ অধ্যায়) ।
ইল্ম অর্থ জ্ঞান। যা মানুষকে কোন
বিষয় সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত
করে। এটি প্রধানতঃ তিন ভাগে
বিভক্ত। ১- ইন্দ্রিয় লব্ধ জ্ঞান ( ﻋﻠﻢ
ﻭﻫﺒﻰ ) । এই জ্ঞান মানুষ ও অন্যান্য
প্রাণী সবার মধ্যে রয়েছে। যেমন
সন্তানের প্রতি স্নেহ ও মমত্ববোধ
এবং তাকে লালন-পালনের
জ্ঞান, যা আল্লাহ প্রত্যেক
প্রাণীর মধ্যে প্রয়োজন
মোতাবেক প্রদান করেছেন। ২-
অর্জিত জ্ঞান (ﻋﻠﻢ ﻛﺴﺒﻰ ) , যা মানুষ
শিক্ষার মাধ্যমে বা অভিজ্ঞতার
মাধ্যমে অর্জন করে। এর মধ্যে ধর্মীয়
ও বস্ত্তগত সকল প্রকারের জ্ঞান
শামিল রয়েছে। ৩- ইলাহী জ্ঞান
(ﻋﻠﻢ ﻭﺣﻰ ) যা ‘অহি’ আকারে
নবীগণের নিকটে এবং ‘ইলহাম’
আকারে নবী ও নবী নন এমন সকলের
নিকটে আল্লাহর পক্ষ হ’তে
নিক্ষেপিত হয়। যুগে যুগে
পৃথিবীতে বড় বড় আবিষ্কার ও বড়
বড় সৃষ্টির সবই বান্দার কল্যাণের
নিমিত্তে আল্লাহর পক্ষ হ’তে
প্রদত্ত ইলহামের ফল ব্যতীত কিছুই
নয়। নবী ব্যতীত অন্যের ইলহাম
শরী‘আতের কোন দলীল নয়। অহি-র
জ্ঞান অভ্রান্ত, যা সরাসরি
আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত হয়। কুরআন ও
সুন্নাহ হ’ল সেই অহি-র জ্ঞানের
আধার। মানুষের অর্জিত জ্ঞান
যদি অহি-র জ্ঞানের দ্বারা
আলোকিত না হয়, তাহ’লে ঐ
জ্ঞান তাকে সত্যিকারের
কল্যাণের পথ দেখাতে পারে না।
বরং সে শয়তানের দ্বারা
পরিচালিত হয়। ইবনু হাজার
আসক্বালানী (রহঃ) বলেন,
সালাফে ছালেহীন ‘ইল্ম’ বলতে
কুরআন ও সুন্নাহর ইল্ম বুঝতেন এবং এই
ইলম শিক্ষা করা আল্লাহর রাসূল
‘ফরয’ করেছেন। কুরআনেরও প্রথম
‘অহি’ হ’ল ﺍﻗْﺮَﺃْ ﺑِﺎﺳْﻢِ ﺭَﺑِّﻚَ ‘ তুমি পড়
তোমার প্রভুর নামে’। অর্থাৎ যে
ইল্ম তার প্রভুর সন্ধান দেয় না,
সেটা প্রকৃত ইল্ম নয়। বরং সেটা হল
শয়তানী ইল্ম। যা মানুষের ক্ষতি
করে এবং তাকে জাহান্নামে
নিয়ে যায়। আল্লাহ বলেন , ﺇِﻧَّﻤَﺎ
ﻳَﺨْﺸَﻰ ﺍﻟﻠﻪَ ﻣِﻦْ ﻋِﺒَﺎﺩِﻩِ ﺍﻟْﻌُﻠَﻤَﺎﺀُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﻋَﺰِﻳﺰٌ ﻏَﻔُﻮﺭٌ
‘ নিশ্চয় তাঁর বান্দাদের মধ্যে
কেবল আলেমগণই আল্লাহকে ভয়
করে। নিশ্চয় আল্লাহ
মহাপরাক্রান্ত ও ক্ষমাশীল’
(ফাত্বের ৩৫/২৮) । কেননা তারাই
আল্লাহর সৃষ্টি তত্ত্ব সম্পর্কে
গবেষণা করে ও সেখান থেকে
উপদেশ গ্রহণ করে। তারাই আল্লাহর
শক্তি ও ক্ষমতা উপলব্ধি করে এবং
তাঁর অবাধ্যতা থেকে বিরত
হওয়ার মাধ্যমে তাঁর প্রকৃত আনুগত্য
করে সত্যিকার অর্থে আল্লাহকে
ভয় করে থাকে।

No comments:

Post a Comment