Saturday, June 6, 2015

প্রশ্ন: যিনি বিদ্বেষন, বশীকরণ বা অন্য কোন যাদুটোনা দ্বারা আক্রান্ত তার চিকিৎসার উপায় কি?


যাদুটোনা থেকে নিরাময়ের
উপায়

প্রশ্ন: যিনি বিদ্বেষন, বশীকরণ বা
অন্য কোন যাদুটোনা দ্বারা
আক্রান্ত তার চিকিৎসার উপায় কি?

মুমিন ব্যক্তি যাদুটোনা থেকে
কিভাবে মুক্তি পেতে পারেন
অথবা কোন পদ্ধতি অবলম্বন করলে
যাদুটোনা তার কোন ক্ষতি করতে
পারবে না।
কুরআন ও হাদিসে এ
সম্পর্কিত কোন দুআ-দরুদ বা যিকির-
আযকার আছে কি?
উত্তর: সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য।
যাদুটোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির
চিকিৎসার বিভিন্ন পদ্ধতি
রয়েছে:
এক: যাদুকর কিভাবে যাদু করেছে
সেটা আগে জানতে হবে।
উদাহরণতঃ যদি জানা যায় যে,
যাদুকর কিছু চুল নির্দিষ্ট কোন
স্থানে অথবা চিরুনির মধ্যে অথবা
অন্য কোন স্থানে রেখে দিয়েছে।
যদি স্থানটি জানা যায় তাহলে
সে জিনিসটি পুড়িয়ে ফেলে ধ্বংস
করে ফেলতে হবে যাতে যাদুর
কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়, যাদুকর
যা করতে চেয়েছে সেটা বাতিল
হয়ে যায়।
দুই: যদি যাদুকরকে শনাক্ত করা যায়
তাহলে তাকে বাধ্য করতে হবে যেন
সে যে যাদু করেছে সেটা নষ্ট করে
ফেলে। তাকে বলা হবে: তুমি যে
তদবির করেছ সেটা নষ্ট কর নতুবা
তোমার গর্দান যাবে। সে যাদুর
তদবিরটি ধ্বংস করে ফেলার পর
মুসলিম শাসক তাকে হত্যা করার
নির্দেশ দিবেন। কারণ বিশুদ্ধ
মতানুযায়ী, যাদুকরকে তওবার
আহ্বান জানানো ছাড়া হত্যা করা
হবে। যেমনটি করেছেন- উমর
(রাঃ)। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে
যে, তিনি বলেন: “যাদুকরের
শাস্তি হচ্ছে তরবারির আঘাতে
তার গর্দান ফেলে দেয়া।” যখন
হাফসা (রাঃ) জানতে পারলেন
যে, তাঁর এক বাঁদি যাদু করে তখন
তাকে হত্যা করা হয়।
তিন: যাদু নষ্ট করার ক্ষেত্রে
ঝাড়ফুঁকের বড় ধরনের প্রভাব রয়েছে:
এর পদ্ধতি হচ্ছে- যাদুতে আক্রান্ত
রোগীর উপর অথবা কোন একটি
পাত্রে আয়াতুল কুরসি অথবা সূরা
আরাফ, সূরা ইউনুস, সূরা ত্বহা এর যাদু
বিষয়ক আয়াতগুলো পড়বে। এগুলোর
সাথে সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস,
সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়বে এবং
রোগীর জন্য দোয়া করবে।
বিশেষতঃ যে দুআটি নবী
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
থেকে সাব্যস্ত হয়েছে:
“আল্লাহুম্মা, রাব্বান নাস!
আযহিবিল বা’স। ওয়াশফি, আনতাশ
শাফি। লা শিফাআ ইল্লা শিফাউক।
শিফাআন লা য়ুগাদিরু সাকামা।”
(অর্থ- হে আল্লাহ! হে মানুষের
প্রতিপালক! আপনি কষ্ট দূর করে দিন ও
আরোগ্য দান করুন। (যেহেতু) আপনিই
রোগ আরোগ্যকারী। আপনার আরোগ্য
দান হচ্ছে প্রকৃত আরোগ্য দান। আপনি
এমনভাবে রোগ নিরাময় করে দিন
যেন তা রোগকে নির্মূল করে দেয়।)
জিব্রাইল (আঃ) নবী সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লামকে যে
দোয়া পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন
সেটাও পড়া যেতে পারে।
সে
দুআটি হচ্ছে- “বিসমিল্লাহি
আরক্বিক মিন কুল্লি শাইয়িন য়ুযিক।
ওয়া মিন শাররি কুল্লি নাফসিন আও
আইনিন হাসিদিন; আল্লাহু
ইয়াশফিক। বিসমিল্লাহি
আরক্বিক।”
(অর্থ- আল্লাহর নামে আমি আপনাকে
ঝাড়ফুঁক করছি। সকল কষ্টদায়ক বিষয়
থেকে। প্রত্যেক আত্মা ও ঈর্ষাপরায়ণ
চক্ষুর অনিষ্ট থেকে। আল্লাহ আপনাকে
আরোগ্য করুন। আল্লাহর নামে আমি
আপনাকে ঝাড়ফুঁক করছি।)
এই দোয়াটি তিনবার পড়ে ফুঁ
দিবেন। সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও
সূরা নাস তিনবার পড়ে ফুঁ দিবেন।
আমরা যে দোয়াগুলো উল্লেখ
করলাম এ দোয়াগুলো পড়ে
পানিতে ফুঁ দিতে হবে। এরপর
যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তি সে পানি
পান করবে। আর অবশিষ্ট পানি দিয়ে
প্রয়োজনমত একবার বা একাধিক বার
গোসল করবে। তাহলে আল্লাহর
ইচ্ছায় রোগী আরোগ্য লাভ করবে।
আলেমগণ এ আমলগুলোর কথা উল্লেখ
করেছেন। শাইখ আব্দুর রহমান বিন
হাসান (রহঃ) ‘ফাতহুল মাজিদ শারহু
কিতাবিত তাওহিদ’ গ্রন্থের
‘নাশরা অধ্যায়ে’ এ বিষয়গুলো ও
আরো কিছু বিষয় উল্লেখ করেছেন।
চার: সাতটি কাঁচা বরই পাতা
সংগ্রহ করে পাতাগুলো গুড়া করবে।
এরপর গুড়াগুলো পানিতে মিশিয়ে
সে পানিতে উল্লেখিত আয়াত ও
দোয়াগুলো পড়ে ফুঁ দিবে। তারপর
সে পানি পানি করবে; আর কিছু
পানি দিয়ে গোসল করবে। যদি
কোন পুরুষকে স্ত্রী-সহবাস থেকে
অক্ষম করে রাখা হয় সেক্ষেত্রেও এ
আমলটি উপকারী। সাতটি বরই পাতা
পানিতে ভিজিয়ে রাখবে। তারপর
সে পানিতে উল্লেখিত আয়াত ও
দোয়াগুলো পড়ে ফুঁ দিবে। এরপর সে
পানি পান করবে ও কিছু পানি
দিয়ে গোসল করবে।
যাদুগ্রস্ত রোগী ও স্ত্রী সহবাসে
অক্ষম করে দেয়া ব্যক্তির
চিকিৎসার জন্য বরই পাতার
পানিতে যে আয়াত ও দোয়াগুলো
পড়তে হবে সেগুলো নিম্নরূপ:
১- সূরা ফাতিহা পড়া।
২- আয়াতুল কুরসি তথা সূরা বাকারার
২৫৫ নং আয়াত পড়া।
ﺍَﻟﻠّٰﻪُ ﻟَﺎٓ ﺍِﻟٰﻪَ ﺍِﻟَّﺎ ﮬُﻮَ ۚ ﺍَﻟْـﺤَﻲُّ ﺍﻟْﻘَﻴُّﻮْﻡُ ﻟَﺎ ﺗَﺎْﺧُﺬُﻩٗ ﺳِـﻨَﺔٌ ﻭَّﻟَﺎ
ﻧَﻮْﻡٌ ۭ ﻟَﻪٗ ﻣَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤٰﻮٰﺕِ ﻭَﻣَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺎَﺭْﺽِ ۭ ﻣَﻦْ ﺫَﺍ
ﺍﻟَّﺬِﻱْ ﻳَﺸْﻔَﻊُ ﻋِﻨْﺪَﻩٗٓ ﺍِﻟَّﺎ ﺑِﺎِﺫْﻧِﻪٖ ۭ ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﻣَﺎ ﺑَﻴْﻦَ ﺍَﻳْﺪِﻳْﻬِﻢْ
ﻭَﻣَﺎ ﺧَﻠْﻔَﮭُﻢْ ۚ ﻭَﻟَﺎ ﻳُﺤِﻴْﻄُﻮْﻥَ ﺑِﺸَﻲْﺀٍ ﻣِّﻦْ ﻋِﻠْﻤِﻪٖٓ ﺍِﻟَّﺎ
ﺑِﻤَﺎ ﺷَﺎۗﺀَ ۚ ﻭَﺳِﻊَ ﻛُﺮْﺳِـﻴُّﻪُ ﺍﻟﺴَّﻤٰﻮٰﺕِ ﻭَﺍﻟْﺎَﺭْﺽَ ۚ ﻭَﻟَﺎ
ﻳَـــــُٔـــﻮْﺩٗﻩُ ﺣِﻔْﻈُﻬُﻤَﺎ ۚ ﻭَﮬُﻮَ ﺍﻟْﻌَﻠِﻲُّ ﺍﻟْﻌَﻈِﻴْﻢُ
(আয়াতটির অর্থ হচ্ছে-“আল্লাহ্; তিনি
ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই।
তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক।
তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে
না, নিদ্রাও নয়। আসমানসমূহে যা
কিছু রয়েছে ও জমিনে যা কিছু
রয়েছে সবই তাঁর। কে সে, যে তাঁর
অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ
করবে? তাদের সামনে ও পিছনে যা
কিছু আছে সে সবকিছু তিনি জানেন।
আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া
তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুকেই
তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না।
তাঁর ‘কুরসী’ আকাশসমূহ ও পৃথিবীকে
পরিব্যাপ্ত করে আছে; আর এ দুটোর
রক্ষণাবেক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয়
না। তিনি সুউচ্চ সুমহান।)
৩- সূরা আরাফের যাদু বিষয়ক
আয়াতগুলো পড়া। সে আয়াতগুলো
হচ্ছে-
ﻗَﺎﻝَ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﺟِﺌْﺖَ ﺑِﺂﻳَﺔٍ ﻓَﺄْﺕِ ﺑِﻬَﺎ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻣِﻦَ
ﺍﻟﺼَّﺎﺩِﻗِﻴﻦَ ( 106) ﻓَﺄَﻟْﻘَﻰ ﻋَﺼَﺎﻩُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻫِﻲَ ﺛُﻌْﺒَﺎﻥٌ
ﻣُﺒِﻴﻦٌ ( 107 ) ﻭَﻧَﺰَﻉَ ﻳَﺪَﻩُ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻫِﻲَ ﺑَﻴْﻀَﺎﺀُ
ﻟِﻠﻨَّﺎﻇِﺮِﻳﻦَ ( 108) ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻤَﻠَﺄُ ﻣِﻦْ ﻗَﻮْﻡِ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ ﺇِﻥَّ
ﻫَﺬَﺍ ﻟَﺴَﺎﺣِﺮٌ ﻋَﻠِﻴﻢٌ ( 109 ) ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺃَﻥْ ﻳُﺨْﺮِﺟَﻜُﻢْ ﻣِﻦْ
ﺃَﺭْﺿِﻜُﻢْ ﻓَﻤَﺎﺫَﺍ ﺗَﺄْﻣُﺮُﻭﻥَ ( 110 ) ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﺃَﺭْﺟِﻪْ ﻭَﺃَﺧَﺎﻩُ
ﻭَﺃَﺭْﺳِﻞْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻤَﺪَﺍﺋِﻦِ ﺣَﺎﺷِﺮِﻳﻦَ ( 111 ) ﻳَﺄْﺗُﻮﻙَ ﺑِﻜُﻞِّ
ﺳَﺎﺣِﺮٍ ﻋَﻠِﻴﻢٍ ( 112 ) ﻭَﺟَﺎﺀَ ﺍﻟﺴَّﺤَﺮَﺓُ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥَ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ
ﺇِﻥَّ ﻟَﻨَﺎ ﻟَﺄَﺟْﺮًﺍ ﺇِﻥْ ﻛُﻨَّﺎ ﻧَﺤْﻦُ ﺍﻟْﻐَﺎﻟِﺒِﻴﻦَ ( 113) ﻗَﺎﻝَ
ﻧَﻌَﻢْ ﻭَﺇِﻧَّﻜُﻢْ ﻟَﻤِﻦَ ﺍﻟْﻤُﻘَﺮَّﺑِﻴﻦَ ( 114 ) ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻳَﺎ ﻣُﻮﺳَﻰ
ﺇِﻣَّﺎ ﺃَﻥْ ﺗُﻠْﻘِﻲَ ﻭَﺇِﻣَّﺎ ﺃَﻥْ ﻧَﻜُﻮﻥَ ﻧَﺤْﻦُ ﺍﻟْﻤُﻠْﻘِﻴﻦَ ( 115 )
ﻗَﺎﻝَ ﺃَﻟْﻘُﻮﺍ ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﻟْﻘَﻮْﺍ ﺳَﺤَﺮُﻭﺍ ﺃَﻋْﻴُﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ
ﻭَﺍﺳْﺘَﺮْﻫَﺒُﻮﻩْﻡُ ﻭَﺟَﺎﺀُﻭﺍ ﺑِﺴِﺤْﺮٍ ﻋَﻈِﻴﻢٍ ( 116 )
ﻭَﺃَﻭْﺣَﻴْﻨَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺃَﻥْ ﺃَﻟْﻖِ ﻋَﺼَﺎﻙَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﻫِﻲَ
ﺗَﻠْﻘَﻒُ ﻣَﺎ ﻳَﺄْﻓِﻜُﻮﻥَ ( 117 ) ﻓَﻮَﻗَﻊَ ﺍﻟْﺤَﻖُّ ﻭَﺑَﻄَﻞَ ﻣَﺎ
ﻛَﺎﻧُﻮﺍ ﻳَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ( 118 ) ﻓَﻐُﻠِﺒُﻮﺍ ﻫُﻨَﺎﻟِﻚَ ﻭَﺍﻧْﻘَﻠَﺒُﻮﺍ
ﺻَﺎﻏِﺮِﻳﻦَ ( 119 ) ﻭَﺃُﻟْﻘِﻲَ ﺍﻟﺴَّﺤَﺮَﺓُ ﺳَﺎﺟِﺪِﻳﻦَ ( 120 )
ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﺁﻣَﻨَّﺎ ﺑِﺮَﺏِّ ﺍﻟْﻌَﺎﻟَﻤِﻴﻦَ ( 121 ) ﺭَﺏِّ ﻣُﻮﺳَﻰ
ﻭَﻫَﺎﺭُﻭﻥَ ( 122 )
(অর্থ- সে বলল, তুমি যদি কোন
নিদর্শন নিয়ে এসে থাক, তাহলে
তা পেশ কর যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে
থাক। তখন তিনি নিজের
লাঠিখানা নিক্ষেপ করলেন এবং
তৎক্ষণাৎ তা জলজ্যান্ত এক অজগরে
রূপান্তরিত হয়ে গেল। আর বের করলেন
নিজের হাত এবং তা সঙ্গে সঙ্গে
দর্শকদের চোখে ধবধবে উজ্জ্বল
দেখাতে লাগল।
ফেরাউনের সাঙ্গ-
পাঙ্গরা বলতে লাগল, নিশ্চয়
লোকটি বিজ্ঞ-যাদুকর। সে
তোমাদেরকে তোমাদের দেশ
থেকে বের করে দিতে চায়। এ
ব্যাপারে তোমাদের মতামত কি?
তারা বলল, আপনি তাকে ও তার
ভাইকে অবকাশ দান করুন এবং শহরে
বন্দরে সংগ্রাহক পাঠিয়ে দিন।
যাতে তারা পরাকাষ্ঠাসম্পন্ন
বিজ্ঞ যাদুকরদের এনে সমবেত করে।
বস্তুতঃ যাদুকররা এসে ফেরাউনের
কাছে উপস্থিত হল। তারা বলল,
আমাদের জন্যে কি কোন
পারিশ্রমিক নির্ধারিত আছে, যদি
আমরা জয়লাভ করি? সে বলল, হ্যাঁ এবং
অবশ্যই তোমরা আমার নিকটবর্তী
লোক হয়ে যাবে। তারা বলল, হে
মূসা! হয় তুমি নিক্ষেপ কর অথবা
আমরা নিক্ষেপ করছি। তিনি বললেন,
তোমরাই নিক্ষেপ কর। যখন তারা
বান নিক্ষেপ করল তখন লোকদের
চোখগুলো যাদুগ্রস্ত হয়ে গেল,
মানুষকে ভীত-সন্ত্রস্ত করে তুলল এবং
মহাযাদু প্রদর্শন করল। তারপর আমি
ওহীযোগে মূসাকে বললাম, এবার
নিক্ষেপ কর তোমার লাঠিখানা।
অতএব সঙ্গে সঙ্গে তা সে সমুদয়কে
গিলতে লাগল, যা তারা যাদুর বলে
বানিয়েছিল। এভাবে সত্য প্রকাশ
হয়ে গেল এবং ভুল প্রতিপন্ন হয়ে গেল
যা কিছু তারা করেছিল। সুতরাং
তারা সেখানেই পরাজিত হয়ে
গেল এবং অতীব লাঞ্ছিত হল। এবং
যাদুকররা সেজদায় পড়ে গেল। বলল,
আমরা ঈমান আনছি মহা বিশ্বের
প্রতিপালকের প্রতি। যিনি মূসা ও
হারুনের প্রতিপালক।)[সূরা আরাফ,
আয়াত: ১০৬-১২২]
৪- সূরা ইউনুসের যাদুবিষয়ক
আয়াতগুলো পড়া। সেগুলো হচ্ছে-
ﻭَﻗَﺎﻝَ ﻓِﺮْﻋَﻮْﻥُ ﺍﺋْﺘُﻮﻧِﻲ ﺑِﻜُﻞِّ ﺳَﺎﺣِﺮٍ ﻋَﻠِﻴﻢٍ (79 ) ﻓَﻠَﻤَّﺎ
ﺟَﺎﺀَ ﺍﻟﺴَّﺤَﺮَﺓُ ﻗَﺎﻝَ ﻟَﻬُﻢْ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺃَﻟْﻘُﻮﺍ ﻣَﺎ ﺃَﻧْﺘُﻢْ
ﻣُﻠْﻘُﻮﻥَ (80) ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﺃَﻟْﻘَﻮْﺍ ﻗَﺎﻝَ ﻣُﻮﺳَﻰ ﻣَﺎ ﺟِﺌْﺘُﻢْ ﺑِﻪِ
ﺍﻟﺴِّﺤْﺮُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﺳَﻴُﺒْﻄِﻠُﻪُ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﺎ ﻳُﺼْﻠِﺢُ ﻋَﻤَﻞَ
ﺍﻟْﻤُﻔْﺴِﺪِﻳﻦَ (81 ) ﻭَﻳُﺤِﻖُّ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﺍﻟْﺤَﻖَّ ﺑِﻜَﻠِﻤَﺎﺗِﻪِ ﻭَﻟَﻮْ
ﻛَﺮِﻩَ ﺍﻟْﻤُﺠْﺮِﻣُﻮﻥَ
(অর্থ- আর ফেরাউন বলল, আমার কাছে
নিয়ে এস সুদক্ষ যাদুকরদিগকে।
তারপর যখন যাদুকররা এল, মূসা
তাদেরকে বললেন: নিক্ষেপ কর,
তোমরা যা কিছু নিক্ষেপ করে
থাক। অতঃপর যখন তারা নিক্ষেপ
করল, মূসা বললেন, যা কিছু তোমরা
এনেছ তা সবই যাদু-এবার আল্লাহ এসব
ভণ্ডুল করে দিচ্ছেন। নিঃসন্দেহে
আল্লাহ দুস্কর্মীদের কর্মকে সুষ্ঠুতা
দান করেন না। আল্লাহ সত্যকে সত্যে
পরিণত করেন স্বীয় নির্দেশে যদিও
পাপীদের তা মনঃপুত নয়।)[সূরা
ইউনুস, আয়াত: ৭৯-৮২]
৫- সূরা ত্বহা এর আয়াতগুলো পড়া।
সেগুলো হচ্ছে-
ﻗَﺎﻟُﻮﺍ ﻳَﺎ ﻣُﻮﺳَﻰ ﺇِﻣَّﺎ ﺃَﻥْ ﺗُﻠْﻘِﻲَ ﻭَﺇِﻣَّﺎ ﺃَﻥْ ﻧَﻜُﻮﻥَ ﺃَﻭَّﻝَ
ﻣَﻦْ ﺃَﻟْﻘَﻰ (65 ) ﻗَﺎﻝَ ﺑَﻞْ ﺃَﻟْﻘُﻮﺍ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺣِﺒَﺎﻟُﻬُﻢْ
ﻭَﻋِﺼِﻴُّﻬُﻢْ ﻳُﺨَﻴَّﻞُ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻣِﻦْ ﺳِﺤْﺮِﻫِﻢْ ﺃَﻧَّﻬَﺎ ﺗَﺴْﻌَﻰ
(66 ) ﻓَﺄَﻭْﺟَﺲَ ﻓِﻲ ﻧَﻔْﺴِﻪِ ﺧِﻴﻔَﺔً ﻣُﻮﺳَﻰ (67) ﻗُﻠْﻨَﺎ
ﻟَﺎ ﺗَﺨَﻒْ ﺇِﻧَّﻚَ ﺃَﻧْﺖَ ﺍﻟْﺄَﻋْﻠَﻰ (68 ) ﻭَﺃَﻟْﻖِ ﻣَﺎ ﻓِﻲ
ﻳَﻤِﻴﻨِﻚَ ﺗَﻠْﻘَﻒْ ﻣَﺎ ﺻَﻨَﻌُﻮﺍ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺻَﻨَﻌُﻮﺍ ﻛَﻴْﺪُ ﺳَﺎﺣِﺮٍ
ﻭَﻟَﺎ ﻳُﻔْﻠِﺢُ ﺍﻟﺴَّﺎﺣِﺮُ ﺣَﻴْﺚُ ﺃَﺗَﻰ (69 )
(অর্থ-তারা বললঃ হে মূসা, হয় তুমি
নিক্ষেপ কর, না হয় আমরা প্রথমে
নিক্ষেপ করি। মূসা বললেনঃ বরং
তোমরাই নিক্ষেপ কর। তাদের
যাদুর প্রভাবে হঠাৎ তাঁর মনে হল,
যেন তাদের রশিগুলো ও
লাঠিগুলো ছুটাছুটি করছে। অতঃপর
মূসা মনে মনে কিছুটা ভীতি অনুভব
করলেন। আমি বললামঃ ভয় করো না,
তুমি বিজয়ী হবে। তোমার ডান
হাতে যা আছে তুমি তা নিক্ষেপ
কর। এটা তারা করেছে যা কিছু
সেগুলোকে গ্রাস করে ফেলবে।
তারা যা করেছে তা তো কেবল
যাদুকরের কলাকৌশল। যাদুকর
যেখানেই থাকুক, সফল হবে না।)
[সূরা ত্বহা, আয়াত: ৬৫-৬৯]
৬- সূরা কাফিরুন পড়া।
৭- সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা
নাস ৩ বার করে পড়া।
৮- কিছু দোয়া দরুদ পড়া। যেমন-
“আল্লাহুম্মা, রাব্বান নাস!
আযহিবিল বা’স। ওয়াশফি, আনতাশ
শাফি। লা শিফাআ ইল্লা শিফাউক।
শিফাআন লা য়ুগাদিরু সাকামা।” [৩
বার]
এর সাথে যদি এ দোয়াটিও পড়াও
ভাল “বিসমিল্লাহি আরক্বিক মিন
কুল্লি শাইয়িন য়ুযিক। ওয়া মিন
শাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন
হাসিদিন; আল্লাহু ইয়াশফিক।
বিসমিল্লাহি আরক্বিক।”[৩ বার]
পূর্বোক্ত আয়াত ও দোয়াগুলো যদি
সরাসরি যাদুতে আক্রান্ত ব্যক্তির
উপরে পড়ে তার মাথা ও বুকে ফুঁক দেয়
তাহলে আল্লাহর ইচ্ছায় নিরাময়
হবে।

শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বাযের বিবিধ
ফতোয়া ও প্রবন্ধ সংকলন সমগ্র (৮/১৪৪)
শাইখ মুহাম্মাদ সালিহ আল-
মুনাজ্জিদ

No comments:

Post a Comment