Saturday, June 6, 2015

আজকের Topic প্রচলিত সম্মিলিত মুনাজাতের ক্ষতিকর দিক সমূহ



প্রচলিত সম্মিলিত মুনাজাতের ক্ষতিকর দিক সমূহঃ
(1) এটি সুন্নাত বিরোধী আমল. অতএব তা যত মিষ্ট ও সুন্দর মনে হোক না কেন সূরায়ে কাহ্ফ-এর 103-4 নং আয়াতের মর্ম অনুযায়ি ওই ব্যক্তির ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের অন্তর্ভুক্ত হবার সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে.
(2) এর ফলে মুছল্লী স্বীয় সালাতের চাইতে সালাতের বাইরের বিষয় অর্থাত প্রচলিত 'মুনাজাত'কেই বেশী গুরুত্ব দেয়.আর এজন্যেই বর্তমানে মানুষ ফরয সালাতের চাইতে মুনাজাতকে বেশী গুরুত্ব দিচ্ছে এবং 'আখেরী মুনাজাত' নামক বিদ'আতী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বেশী আগ্রহ বোধ করছে ও দলে দলে সেখানে ভির জমাচ্ছে.
(3) এর মন্দ পরিণতিতে একজন মুছল্লী সারা জীবন সালাত আদায় করেও কোন কিছুর অর্থ শিখে না. বরং সালাত শেষে ইমামের মুনাজাতের মুখাপেক্ষী থাকে.
(4) ইমাম আরবী মুনাজাতে কী বললেন সে কিছুই বুঝতে পারেনা. ওদিকে নিজেও কিছু বলতে পারে না. এর পূর্বে সালাতের মধ্যে সে যে দো'আগুলো পরেছে, অর্থ না জানার সেখানেও সে অন্তর ঢেলে দিতে পারেনি. ফলে জীবনভর ওই মুছল্লীর অবস্থা থাকে 'না ঘরকা না ঘাটকা'.
(5) মুছল্লীর মনের কথা ইমাম সাহেবের অজানা থাকার ফলে মুছল্লীর কেবল 'আমীন' বলাই সার হয়.
(6) ইমাম সাহেবের দীর্ঘক্ষন ধরে আরবী-উর্দু-বাংলা বা অন্য ভাষায় করুন সুরের মুনাজাতের মাধ্যমে শ্রোতা ও মুছল্লীদের মন জয় করা অন্যতম উদ্দেশ্য থাকতে পারে. ফলে 'রিয়া' ও 'শ্রুতি'-র কবীরা গোনাহ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে. 'রিয়া'-কে হাদীসে 'ছোট শিরক' বলা হয়েছেঃ [দলীল নিচে 1নং টা]
যার ফলে ইমাম সাহেবের সমস্ত নেকী বরবাদ হয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা স্রিষ্টী হতে পারে.


[1]ঃ[আহমাদ,মিশকাত হা/5334 'হ্রিদয় গলানো' অধ্যায়-26, 'লোক দেখানো ও শুনানো' অনুচ্ছেদ-5]
‘আপনি বলে দিন,
আমি কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত
আমলকারীদের
সম্পর্কে জানিয়ে দিব?
(দুনিয়াবী জীবনে) যাদের
সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে গেছে। অথচ তারা ভাবে যে, তারা সুন্দর
আমলই করে যাচ্ছে’ (কাহফ
১০৩-৪)
[সালাতুর রাসুলﷺ পেজঃ132-133]
হানাফী বনাম হানাফী
ফরয নামায
শেষে সম্মিলিত
মুনাজাত
হানাফী পন্ডিতদের
কাছে বিদ'আত আর বর্তমান কিছু
কিছু হুজুরদের নিকট
মুস্তাহাব।
===============
===============
=============== ফরয নামাযের
পরে সম্মিলিতভাবে হাত
উঠিয়ে দোয়া করা আমাদের
দেশে অধিকাংশ মসজিদেই
সুদীর্ঘ কাল থেকে এ
রেওয়াজ চলে আসছে। এই মুনাজাত
যে বিদ'আত
বা মনগড়া ইবাদত তার
কারণ তারা রাসুল(সাঃ)
সাহাবী, চার ইমাম সহ
যত আইম্মায়ে মুজতাহীদিন
ছিলেন
তাদের কারো কাছ
থেকে বর্ণিত
হয় নি।
আসুন আমরা হানাফী মাযহাবের
বিখ্যাত কয়েকজন
মুহাদ্দিস ও
আলিমদের মতামত
জেনে নেইঃ
(১) শাইখ আব্দুল হক মুহাদ্দিস
দেহলভি(রহঃ) যিনি সর্ব
প্রথম আরব
থেকে ভারতের
বুকে হাদীসের
জ্ঞান ছড়িয়েছেন তিনি লিখেন,
আরবের কোন কোন
স্থানে এবং আজমের
অধিকাংশ
স্থানে নামাজ
শেষে মুনাজাতের যে প্রচলিত
অর্থাৎ নামাজ
শেষে ইমাম
সাহেব
সম্মিলিতভাবে দোয়া করেন
এবং মুক্তাদিগণ আমীন আমীন
বলেন- এ ধরনের মুনাজাত
রাসুল
(সাঃ) এর যুগে কখোন ছিল
না এ
বিষয়ে কোন হাদীস ও নেই।
(শরহে আসসিরাতুল
মুস্তাকীমঃ ৯০)
(২) বজলুল মাজ হুদ
শরহে আবু দাউদ এর
লিখক খলীল আহমদ সাহানপুরী(রহঃ)
লিখেছেন,
শাফেয়ী এবং হানাফী মাযহাবের
কোন কোন ইমাম নামাজ
শেষে মুক্তাদি সহ
সম্মিলিতভাবে দু'হাত উত্তোলন
করে যে মুনাজাত করেন,
শরীয়তে তার কোন প্রমাণ
নেই।
(বজলুল মাঝুদ, ৩/১৩৮)
(৩) শাহ আনওয়ার কাশ্মীরী(রহঃ)
বলেন, বরতমান
যুগে যে সম্মিলিত
দোয়া প্রচলিত
আছে তা রাসুল
(সাঃ) থেকে বর্ণিত নয় এবং যে সমস্ত
দোয়া বর্ণিত
হয়েছে সেগুলোতে হাত
উত্তোলনের কথা বর্ণিত
হয় নি।
(ফয়জুল বারী, ২/১৬৭) (৪) মাওলানা ইউসুফ বিন
নূরী(রহঃ)
লিখেছেন, অনেক
শহরে ফরজ
নামাজ শেষে দু'হাত
উত্তোলন করে সম্মিলিতভাবে দোয়া করা হয়।
অথচ রাসুল(সাঃ) এর
যুগে এমন
দোয়া একবার ও হয় নি,
সদা সর্বদা হওয়া তো দূরের
কথা। তবে ফরজ নামাজ
শষে দোয়া পাঠ
করার বিধান আছে। কিন্তু
তাতে হাত উত্তোলনের
প্রথা বা সম্মিলিত
দোয়া করা কোন প্রথা প্রচল ছিল
না।
(মা'আরেফুসসুনান, ৩/৪০৯)
(৫) পাকিস্থানের
যুগশ্রেষ্ঠ
মুফতী "মা'আরেফুল কুর আন" এর লিখক
মুফতী শফী(রহঃ) লিখেন,
মুলতঃ সুন্নাত হচ্ছে - ফরজ
নামাজের শেষে কোন
সম্মিলিত
আমল করবে না। বরং প্রত্যেক
ব্যক্তি মুক্তভাবে সুন্নাত,
নফল
বা দোয়া দরুদে মগ্ন হবে।
তবে বর্তমানে তার
বিপরীত নব শরীয়ত আবিষ্কার
হয়ে গেল
( ব্যাপারটি দুঃখজনক
বটে).
(আহকামে দোয়া, ১৫)
(৬) হাকীমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী(রহঃ) বলেন,
ফরজ
নামাজের পর দু'হাত
উঠিয়ে ইমাম
সাহেব দোয়া করবেন
এবং মুক্তাদিগণ আমীন আমীন
বলে এ সম্পর্কে উলামাগণ
বিস্তারিত
আলোচনা করেছেন।
শেষ সমাধান হল
যা ইবনে আরাফাহ (রহঃ) এবং ইমাম
গাব্বাইনী(রহঃ)
লিখেছেন, যদি এই
দোয়াকে নামাজের সুন্নাত
বা মুস্তাহাব
মনে করে তাহলে এই মুনাজাত জায়েয নাই।
(ইস্তেহবাবুদ্দাওয়াতঃ ৮)
(৭) মাওলানা আব্দুল হাই
লখনবী(রহঃ) লিখেন,
বর্তমান
যুগে সালাম ফিরানোর সঙ্গে সঙ্গে ইমাম সাহেব
দু'হাত
উত্তোলন
করে দোয়া করে এবং মুক্তাদিগণ
আমীন আমীন বলে; এমন
নিয়ম শরীয়তে ছিল না।
(মজমুয়ায়ে ফতওয়া, ১/
১৬১)
আরো বিস্তারিত
জানতে পাঠ
করুন আল্লামা ফয়যুল্লাহ (রহঃ)
হাঠাজারী- এর
লিখা "প্রচলিত
দু'আর বিধান"
উপরে হানাফী মাযহাবের
যে সকল উলামাদের মতামত পেশ
করলাম তাদেরকে বাদ
দিয়ে ভারতবর্ষের
হানাফী মাযহাব এর
পন্ডিত আর
কারা? কারণ ভারতবর্ষে হানাফী মাযহাব
উনাদের মাধ্যমেই
বিস্তার লাভ
করে। বর্তমানে কিছু
হানাফী হুজুরদের
কথা মানব না পূর্বের
মুফতী মুহাদ্দিস ও
পন্ডিতদের কথা মানব?
আসল
হানাফী কারা? আপনারাই
বিবেচনা করুন।

No comments:

Post a Comment