তাবীয, তাগা, আংটি ঝুলানো কিংবা বাঁধা স্পষ্ট শির্ক তথা হারাম

 তাবীয, তাগা, আংটি ঝুলানো কিংবা বাঁধা স্পষ্ট শির্ক তথা হারাম:

অল্লাহ তা‘আলা এই আসমান ও যমীন এবং উভয়ের মধ্যেকার যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু তিনি যে কল্যাণ যে বস্তুর ভিতর রাখেননি, ঐ বস্তু সেই উপকার করতে পারে বলে অনেকে স্বেচ্ছায় ও স্বজ্ঞানে বিশ্বাস করে। এরূপ বিশ্বাস শির্কের পর্যায়ভুক্ত। যেমন বহু লোক তাবীয-কবয, শিরকী ঝাড়-ফুঁক, বিভিন্ন প্রকার সূতা বা তাগা এবং বিভিন্ন প্রকার পাথর ব্যবহার করে থাকে। তাদের বিশ্বাস যে, এতে কোন রোগ ব্যাধি কাছে ভিড়তে পারে না। আর যদি কোন রোগ হয়েই থাকে তবে এগুলি ব্যবহার করলে সুস্থতা ফিরে আসবে। মূলত এগুলি ব্যবহারের পিছনে গণক, যাদুকর প্রমুখ শ্রেণীর পরামর্শ আর যুগ যুগ ধরে চলে আসা জাহেলী রসম-রেওয়ায ও প্রথা কাজ করছে।
অনেকেই মানুষের বদ নযর প্রতিরোধ করার জন্য ছোট ছেলে-মেয়েদের এবং বড়দের গলায় এসব ঝুলিয়ে থাকে, শরীরের অন্য জায়গায়ও বেঁধে রাখে। গাড়ী ও বাড়ীতেও এমনিভাবে তাবীয ও দু‘আ-কালাম লিখিত কাগজ ঝুলিয়ে রাখার প্রচলন দেখা যায়। এতে গাড়ী-বাড়ী সবই দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যায় বলে তাদের বিশ্বাস।

অনেকে আবার রোগের হাত থেকে বেঁচে থাকার জন্য কিংবা রোগ যাতে হ’তে না পারে সে জন্য কয়েক প্রকার ধাতু নির্মিত আংটি ব্যবহার করে থাকে। এর ফলে আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল অর্থাৎ ভরসা কমে যায় আর হারাম জিনিস দ্বারা চিকিৎসার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। এসব তাবীযের অনেকগুলিতেই স্পষ্ট শিরকী কথা, জিনের নিকট ফরিয়াদ, সূক্ষ আঁকা-বাঁকা রেখা ও অবোধ্য কথা লেখা থাকে। অনেক জ্ঞানপাপী শির্কী কথা ও মন্ত্র-তন্ত্রের সাথে কুর‘আনের আয়াত মিশিয়ে দেয়। আর কেউ কেউ নাপাক দ্রব্য যেমন ঋতুস্রাবের রক্ত ইত্যাদি দিয়েও তাবীয লেখে। এ ধরণের তাবীয, তাগা, আংটি ঝুলানো কিংবা বাঁধা স্পষ্ট শির্ক তথা হারাম। এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লা-হ (ছাল্লাল্লা-হু আলাইহি অ-সাল্লাম) বলেছেন,
"مَنْ عَلَّقَ تَمِيْمَةً فَقَدْ أَشْرَكَ"
(أحمد ৪/১৫৬, الباني سلسلة صحيحة ح/৪৯২)
অর্থঃ “যে ব্যক্তি তাবীয লটকালো বা ঝুলালো নিশ্চয়ই সে আল্লাহর সাথে শির্ক করল” (আহমাদ ৪/১৫৬, আলবানী সিলসিলা ছহীহা হাদীছ নং ৪৯২)। যে তাবীয ব্যবহার করে এ বিশ্বাস নিয়ে যে, এসব জিনিস আল্লাহর ইচ্ছা ছাড়াই উপকার কিংবা অপকার করতে পারে, তাহলে সে বড় শির্ক করার দোষে দোষী হবে। আর যদি সে বিশ্বাস করে যে, এ গুলি উপকার বা অপকারের একটি ওয়াসীলা মাত্র। অথচ আল্লাহ তা‘আলা এ গুলিকে রোগ নিরাময়ের জন্য কোন ওয়াসীলা হিসাবে নির্ধারণ করেন নি, সে ক্ষেত্রে সে ছোট গুনাহ করার দোষে দোষী হবে। আর তখন এটা শির্কে মিলিত হওয়ার অন্যতম কারণ হিসাবে গণ্য হবে।