Sunday, June 7, 2015

হাদীস কাকে বলে?



হাদীস কাকে বলে?
হাদীস শব্দের আভিধানিক অর্থ কথা, বাণী, সংবাদ, বিষয়, অভিনব ব্যাপার ইত্যাদি ।
পারিভাষিক ও প্রচলিত অর্থে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা, কাজ, সমর্থন, আচরণ এমনকি তাঁর দৈহিক ও মানসিক কাঠামো সংক্রান্ত বিবরণকেও হাদীস বলে ।
সাহাবায়ে কিরামের কথা, কাজ ও সমর্থনকেও হাদীস বলা হয় । অবশ্য পরে উসুলে হাদীসে তাঁদের কথা, কাজ ও সমর্থনের নাম দেয়া হয়েছে ‘আসার’ এবং হাদীসে মওকুফ’ এবং তাবেয়ীগণের কথা, কাজ ও সমর্থনের নাম দেয়া হয়েছে ‘ফতোয়া’ ।
হাদীসের প্রকারভেদ
হাদীসমূহকে সংজ্ঞাগত, বর্ণনাগত এবং বিষয় বস্তুগতভাবেও ভাগ করা হয়েছে ।
সংজ্ঞাগতভাবে মুখ্যত হাদীস তিন প্রকার–
১) নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখনিঃসৃত কথা বা বাণীকে ‘কওলী’ হাদীস বলা হয় ।
২) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাজ, কর্মপন্থা ও বাস্তব আচরণকে ‘ফিইলী’ হাদীস বলা হয় ।
৩) আর তা সমর্থন ও অনুমোদনপ্রাপ্ত বিষয়গুলোকে বলা হয় ‘তাকরীরী’ হাদীস ।
হাদীসের বর্ণনাগত প্রকারভেদ
হাদীস বিশারদগণ বর্ণনাগতভাবে হাদীসমূহকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করেছেন। নিম্নে ধারাবাহিকভাবে সেগুলো উলেখ করা হলোঃ
খবরে মুতাওয়াতির : সেসব হাদীসকে খবরে মুতাওয়াতির বলা হয়, প্রতিটি যুগেই যে হাদীসগুলোর বর্ণনাকারীদের সংখ্যা ছিল এতো অধিক যাদের মিথ্যাচারের মতৈক্য হওয়া স্বাভাবিকভাবেই অসম্ভব।
খবরে ওয়াহিদ : সেসব হাদীসকে খবরে ওয়াহিদ বলে, যেগুলোর বর্ণনাকারীদের সংখ্যা মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌঁছায়নি। হাদীস বিশারদগণ এরুপ হাদীসকে তিনভাগে ভাগ করেছেন
মশহুর : বর্ণনাকারী সাহাবীর পরে কোনো যুগে যে হাদীসের বর্ণনাকারীর সংখ্যা তিনের কম ছিল না।
আযীব : যে হাদীসের বর্ণনাকারী সংখ্যা কোনো যুগেই দুই-এর কম ছিল না।
গরীব : যার বর্ণনাকরীর সংখ্যা কোনো কোনো যুগে একে এসে পৌঁছেছে।
মারফু : যে হাদীসের বর্ণনাসূত্র (সনদ) রাসূলুলাহ সালালাহু আলাইহি ওয়াসালাম পর্যন্ত পৌঁছেছে তাকে হাদীসে মারফূ’ বলে।
মাওকুফ : যে হাদীসে বর্ণনা পরস্পরা (সনদ) সাহাবী পর্যন্ত এসে স্থগিত হয়ে গেছে তাকে হাদীসে মাওকুফ বলে।
মাকতু : যে হাদীসের সনদ তাবেয়ী পর্যন্ত এসে স্থগিত হয়েছে তাকে মাকতু বলে।
মুত্তাসিল : শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত উপর থেকে নিচ পর্যন্ত যে হাদীসের সনদ বা বর্ণনাকারীদের ধারাবাহিকতা সম্পূর্ণ অুন্ন থেকেছে এবং কোন পর্যায়ে কোন বর্ণনাকারী অনুলেখিত থাকেনি এরূপ হাদীসকে হাদীসে মুত্তাসিল বলে।
মুনকাতি : যে হাদীসের বর্ণনাকরীদের ধারাবাহিকতা অুন্ন না থেকে মাঝখান থেকে কোনো বর্ণনাকারীর নাম উহ্য বা লুপ্ত রয়ে গেছে তাকে হাদীসে মুনকাতি বলে।
মুয়ালাক : যে হাদীসের গোটা সনদ বা প্রথম দিকের সনদ উহ্য থকে তাকে হাদীসে মুয়ালাক বলে।
মু’দাল : যে হাদীসে ধারাবাহিকভাবে দুই বা তদুর্র্ধ বর্ণনাকারী উহ্য থাকে তাকে মু’দাল বলে।
শায : ঐ হাদীসকে শায বলে যার বর্ণনাকারী বিশ্বস্ত বটে, কিন্তু হাদীসটি তার চাইতে অধিক বিশ্বস্ত বর্ণনাকারীর বর্ণনার বিপরীত।
মুনকার ও মা’রূফ : কোন দুর্বল বর্ণনাকারী যদি কোন বিশ্বস্ত বর্ণনাকারীর বর্ণনার বিপরীত হাদীস বর্ণনা করে, তবে দুর্বল বর্ণনাকারীর হাদীসকে ‘মুনকার’ এবং বিশ্বস্ত বর্ণনাকারীর হাদীসকে মা’রূফ বলে।
মুয়ালাল : যে হাদীসের সনদে এমন সুè ত্র“টি থাকে যা কেবল হাদীস বিশারদগণই পরখ করতে পারেন। এ ধরনের সু ত্র“টিপূর্ণ হাদীসকে মুয়ালাল বলে।
সহীহ : যে হাদীসের সনদে নিম্নোক্ত বৈশিষ্ট্যসমূহ থাকে, তাকে সহীহ হাদীস বলে ঃ ১) মুত্তাসিল সনদ, ২) বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য বর্ণনাকারী ৩) স্বচ্ছ স্মরণশক্তি ৪) শায নয় এবং ৫) মুয়ালাল নয়।
সনদ ও মতন : (…………)

No comments:

Post a Comment